প্রিয় মুসলিম জাতি, আমরা জানি সাতটি দিন মিলেই পূর্ণ হয় একটি সপ্তাহ। তার মধ্যে আল্লাহ্ তাআলা আমাদের জন্য একটি বরকতপূর্ণ দিন নির্ধারণ করেছেন। আর সেদিনটি হল, পবিত্র জুমার দিন। যেদিনটি অনেক বরকতপূর্ণ!। যেদিনটির বড়ত্ব ও মহত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে;
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
অর্থাৎ; জুমার দিনে যখন তোমাদেরকে নামাযের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর যিকির তালাশ কর এবং তা ত্যাগ কর এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা আমাকে চিনতে।
সার কথা হল; যখন জুমার আজান হয়ে যায়, তখন যেন দুনিয়ার মানুষেরা সমস্ত কাজকর্ম ত্যাগ করে, আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়। উক্ত আয়াতে এটাই বুঝানো হয়েছে। যেদিনে দোয়া করলে আল্লাহ্ তা’আলা তা সানন্দে কবুল করে নেন। এই দিনের কিছু নির্ধারিত আমলও রয়েছে। যেমন; জুমার দিন সবার আগে মসজিদে যাওয়া, রসূল সাঃ এর উপর বেশি বেশি দরুদ পড়া, সবার আগে মসজিদে যাওয়া, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা ও সূরা কাহাফ এর আমল করা। এরূপ আরো অনেক আমল রয়েছে।
প্রিয় বন্ধুরা, যেহেতু এই দিনের গুরুত্ব আল্লাহর কাছে অনেক বেশি! তাই তিনি এই দিনের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য বান্দার উপর কিছু বিধিমালা আরোপ করেছেন। যেমন; জুমার আজান হওয়ার সাথে সাথে, মানুষ যেন তাদের কাজকর্ম বাদ দিয়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়। এরূপ আরো অনেক বিধিমালা রয়েছে। জুমার দিনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে, হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে ইরশাদ করেছেন যে; قال النبي (ص) في الحديث:
– يوم الجمعة بالنسبة للمؤمن هو يوم العيد الأسبوعي.
(ابن ماجه، الحديث رقم 1098).
অর্থাৎ; রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেনঃ
মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)
প্রিয় ভাই, আসুন! একটু ভেবে দেখি। যে দিনটির মহত্ত্ব আল্লাহর কাছে এত বেশি! যেদিনে আমল করার জন্য, আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষ অফার দিয়েছেন। বিভিন্ন উপায়ে বান্দাকে উদ্বুদ্ধ করেছেন,
যেন বান্দারা বেশি বেশি আমল করতে পারে।
প্রিয় বন্ধুরা, যে দিনটিকে আল্লাহ এত গুরুত্ব দিয়েছেন, এত বরকত পূর্ণ করেছেন। সে দিনটিকে আমরা বানিয়ে নিয়েছি, আমাদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার দিন। যেদিনে আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং বেশি বেশি আমল করার জন্য বলেছেন। সেদিনটিকে আমরা দুনিয়ার ব্যস্ততার দিন বানিয়ে নিয়েছি। অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়; আমরা এই দিনে এত ব্যস্ত যে, জুমার নামাজ পড়ার জন্য আমরা মসজিদে গমন করি, খুতবা শুরু হওয়া বা শেষ হওয়ার একটু আগে। যেখানে আল্লাহ তায়ালা আদেশ করেছেন, তোমরা জুমার আজান হওয়ার সাথে সাথে মসজিদের দিকে গমন করো। প্রিয় বন্ধুরা, যে জাতি তার রবের কথা অমান্য করে, তাদের উপর তো তার রবের পক্ষ থেকে আজব এবং গজব আসবেই! এটাই স্বাভাবিক। আজ আমাদের উপর, যে জুলুম নির্যাতন হচ্ছে, সেটা আমাদের কর্মেরই ফল।
পরিশেষে সকল মুসলিম ভাই ও বোনকে বলবো! আসুন, এখনো সময় আছে। আল্লাহ তায়ালা থেকে ক্ষমা চাই। তিনি অবশ্যই আমাদেরকে ক্ষমা করবেন, ইনশাআল্লাহ।