আমার জীবনটা খুব বেশি বড় নয়। এই ১৮ বছরের জীবনে আমার কাছে অনেকে ভালোবাসার আবদার নিয়ে এসেছে। কিন্তু দিনশেষে শুধু যন্ত্রণা মিলেছে। আমি বহুবার হাত কেটেছি, ঘুমের ওষুধ খেয়েছি, সারা দিনরাত ঘুমিয়েছি, সারা দিনরাত জেগেছি। এটা সত্য যে কোনো নির্দিষ্ট মানুষের জন্য এসব করিনি কিন্তু এটাও ততটাই সত্য মানুষগুলোর জন্য কষ্ট পেয়ে এসব করেছি। কখনো কষ্ট পেয়েছি পরিবারের মানুষের থেকে কখনো বা…।
কেননা আমি ভেবেছি তারা তো আমাকে কষ্ট দিতেই চেয়েছে! জানেন তো, আমি ভীষণ বোকা তাই এখনো আমার শিক্ষা হয়না। অল্পতেই বিশ্বাস করা স্বভাব যেমন আমি বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম আপনি আমাকে ভীষণ ভালোবাসেন। যদিও আমি আপনার মুখ থেকে বহুবার শুনেছি, আপনার প্রাক্তনকে আপনি কতটা ভালোবাসেন। আমি হাসিমুখে সব দেখেছি শুনেছি পরিশেষে সহ্য করে নিয়েছি। বিশ্বাস করুন এটা কি পরিমাণ যন্ত্রণার সেই জায়গায় না যাওয়া পর্যন্ত আপনি বুঝতে পারবেন না। তাহলে একবার ভাবুন, সৃষ্টিকর্তা তার বান্দাকে সৃষ্টি করে শুধুমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য, তাঁকে ভালোবাসার জন্য। আমরা যখন তাঁর মুখের উপর বলি, আমি অমুককে খুব ভালোবাসি, তাকে ছাড়া আমার জীবন শেষ। নেশা করে দেবদাস হয়ে পড়ে থাকি পার্বতীর স্মৃতি নিয়ে কিংবা জুলিয়েট হয়ে ছুরি বসিয়ে দেই কন্ঠে। এটা সৃষ্টিকর্তা কিভাবে সহ্য করেন! তাঁর কতটা কষ্ট লাগতে পারে, অসন্তুষ্টি আসতে পারে কখনো ভেবে দেখেছেন কি।আপনি নিজে যখন কিছু তৈরী করবেন ভেবে নিন তাকে কথা বলার ক্ষমতা দেয়া হলো আর সে বলল, সে আপনাকে নয় বরং অন্য কাউকে ভালোবাসে। আমরাও সৃষ্টিকর্তার সাথে এই বিষয়টি করছি না কি? হ্যাঁ আমিও যেমন যন্ত্রণা ভোগ করি কিন্তু সহ্য করি এই বিশ্বাসে একদিন হয়তো আপনি ফিরে আসবেন। শান্তির জন্য আপনার সাথে কথা বলেছি যখন কথা বলার অভ্যাস হয়ে গেছে তখন আরও মনের অস্থিরতা বেড়েছে। উপলব্ধি করলাম, আপনাকে কখনোই সৃষ্টিকর্তার থেকে বেশি ভালোবাসি না, সেটা দিক থেকেও চরম সত্যি আমার কিংবা আপনার প্রাক্তনের ক্ষেত্রে।
আমরা যার কাছ থেকে এসেছি তাঁর কাছেই ফিরে যাওয়া উচিত। যিনি আপনাকে আমাকে এত সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন, এত ভালোবাসেন নিশ্চয়ই তিনি আমার জন্য উত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। হ্যাঁ, আমি আপনাকে ভালোবাসি এটাও চরম সত্য। আপনাকে ভালোবাসি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে, নরনারীর স্বাভাবিক চাহিদা থেকে। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই জানেন তাঁর বান্দার জন্য কোনটা কল্যাণকর, কি চায় তাঁর বান্দা। সুতরাং আমি অপেক্ষা করবো আপনার জন্য যিনি আমার জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। আমি অপেক্ষা করবো সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সুন্দর একটি হালাল বা বৈধ সম্পর্ক।যে সম্পর্কে স্নেহ, মায়া, প্রেম, ভালোবাসা থাকবে। যুগের পর যুগ কেটে গেলেও কখনো ক্লান্তি আসবে না সম্পর্কে, বিধ্বস্ত লাগবে না নিজেকে বরং একবার জড়িয়ে ধরলে কয়েক’শ বছর আয়ু বেড়ে যাবে। যেখানে বিরহ আসলে নিজেকে রক্তাক্ত করতে হবে না বরং একে অপরের মঙ্গল কামনায় সারা জীবন পার হয়ে যাবে। আর এটাই কল্যাণের পথ।