-একটা কথা বলবো রাফি?
-বল।
-তোকে খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে রে।
-মিম..
-সত্যি বলছিরে, তোকে খুব খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে। যতটুকু ভালোবাসলে সারাজীবন তুই আমার হয়ে থাকবি, ঠিক তার থেকেও বেশি।
রাফি গম্ভীর ভাবে বললো,” ভার্সিটি জীবনের শেষ সময় এসে গেছে। শেষ সময় এসে কেন ভালোবাসতে ইচ্ছে হলো মিম।
-জানি না।
দু’জনে চুপ হয়ে বসে রইল।
হাল্কা বাতাসে মিমের চুলগুলো উড়ে মুখের উপরে পরছে। চুলের দিকে তার নজর নেই, সামনে পুকুর, সেদিকে তাকিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রইল।সে গভীর চিন্তায় মগ্ন। এ যে কখনো শেষ হবার নয়।
কিছুক্ষণ পর মিম বললোঃ-তবে..
– তবে কি?
– তবে এখন আমার কান্না করতে ইচ্ছে করছে রাফি। তোর হাতটা ধরতে দিবি।
– না।
– এমন করিস না,দে না তোর হাতটা ধরি, একটু কান্না করি। কান্না করলে আমার মনটা ভালো হবে।
রাফির হাত ধরে পার্কের ভিতরেই মিম ছোট্ট বাচ্চাদের মতো কান্না করছে। মিম কতক্ষণ কান্না করছে সে জানে না। অনেকক্ষণ পর কান্না থাকিয়ে চোখ মুছে রাফির চোখের দিকে তাকালো। মিমের মুখে মিষ্টি হাসি। এ হাসি যে মিথ্যা রাফি বুঝতে পারছে,তবে সে কিছুই বলছে না।
মিম বললো,” রাফি তোর জীবন এলোমেলো হয়ে গেলে আমার খুব খারাপ লাগবে। শোন না,তুই পড়াশোনা শেষ করে অতি সুন্দরী না,তবে মায়াবী একজন মেয়ে দেখে বিয়ে করবি। যে তোকে খুব ভালোবাসবে। তোর এলোমেলো জীবনটাকে গুছিয়ে রাখবে।
রাফি উত্তর দিতে যাবে, তার আগেই মিম বললোঃ–কোনো কথা বলিস না,তোর কথা যত শুনি ততই আমার কষ্ট হয়। শোন যখন আমার বিয়ে হয়ে যাবে, বিয়ের দিন সকালে আসবি। তুই আমার বিয়েতে আসলে আমার খুব ভালো লাগবে। আসবি তো?
-আসবো.।
-আমাকে ঝালমুড়ি খাওয়াতে পারবি। পকেটে টাকা আছে ?
-আছে।
-এভাবে কথা বলবি না। জানি তোর পকেটে টাকা নেই। চল আমি টাকা দিবো, দু’জনে অনেকগুলো মরিচের গুঁড়া দিয়ে ঝালমুড়ি খাবো। খাওয়ার পর যখন তোর চোখে পানি আসবে তখন দেখবো তোকে কতটা সুন্দর লাগে,খাবি তো..?
-খাবো।
-আমার হাতটা ধর,সামনেই ঝালমুড়ির দোকান দেখা যাচ্ছে, সেখানে খাবো। আজ সারা বিকাল তোর হাত ধরে আমি হাঁটবো।
দু’জন শেষ হওয়ার গল্প, সমাপ্ত হওয়ার গল্পের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। এখানেই তাদের গল্পের সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিলো না,তবুও শেষ, তবুও সমাপ্ত।
তোমার অপেক্ষায় — গোলাম সরোয়ার