কবিতার মাঝে যেমন মাত্রামিল পদ্য ছন্দের কবিতার অস্তিত্ব আছে; তেমনি মাত্রা অমিল গদ্য ছন্দের কবিতার, নঞ্ মুক্তক ছন্দের কবিতার অস্তিত্ব আছে; এ কথাটি যে কবি অস্বীকার করবে সে মনে হয় কবিতা সম্পর্কে বেশি কিছু জানে না, সে মনে হয় কবিতার প্রকারভেদ সম্পর্কে কিছু জানে না, যার কারণে সে এমন কথা বলে বেড়াচ্ছে, মাত্রা মিল হলেই তার কাছে কবিতা, ছন্দ মিল হলেই তার কাছে কবিতা; আর যে কবিতার মাঝে মাত্রা মিল থাকবে না, ছন্দ মিল থাকবে না, তার কাছে সেটি কবিতা নয়! তার কাছে সেটি কবিতা হলো অকবিতা! বড় বিস্ময়কর ব্যাপার!
তার কাছে মনে হয় মাত্রা মিল হলেই কবিতা, মাত্রা অমিল হলে সেটি কবিতা নয়; তার কাছে মনে হয় মাত্রামিল হলেই ছন্দ, ছন্দের কবিতা! আর মাত্রা অমিল হলে সেটি ছন্দ নয়, সেটি ছন্দের কবিতা নয়! সেটি হলো অকবিতা! বড় আজব ব্যাপার!
তার হয়তো জানা নেই; ছন্দ দু-প্রকার;
১/ নির্দিষ্ট মাত্রা মিলে ছন্দ (পদ্য ছন্দ)
২/ অনির্দিষ্ট মাত্রা মিলে ছন্দ (গদ্য ছন্দ, নঞ্ মুক্তক ছন্দ)
এ কথাটি সে কবি কি অস্বীকার করতে পারবে? তাহলে কেন সে নূতন কবিদেরকে বিভ্রান্তির মাঝে ফেলে দিচ্ছে? তাহলে কেন সে নূতন কবিদের সুপ্ত চেতনাগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে? তাহলে কেন সে নূতন কবিদের উদিত প্রতিভাকে ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে?
আরে তাদেরকে লিখতে দিন; তাদেরকে লেখার জন্য প্রেরণা দিন; তারা লিখতে থাক, তারা এখন কবিতার ক্লাসে সবেমাত্র One Two ক্লাসের ছাত্র, One Two ক্লাসের ছাত্র কি কবিতার সারগাম, কবিতার ব্যাকরণ সম্পর্কে বুঝতে পারবে? কেন আপনি তাদেরকে এত প্রেসার দিচ্ছেন? আপনি বলেন তো আপনি যখন কবিতা লেখা শুরু করছেন! তখন কি আপনি কবিতা লেখার সারগাম, কবিতা লেখার ব্যাকরণ আয়ত্ত করে নিয়ে কবিতা লেখা শুরু করেছেন? আপনার জীবনের প্রথম কবিতা কি নির্দিষ্ট মাত্রামিল ছন্দের কবিতা হয়েছে? আপনার জীবনে প্রথম কবিতাটি কোন ছন্দের কবিতা হয়েছে? সাহস করে সঠিক কথাটি বলেন তো?
তাহলে অযথা কেন নূতন কবিদেরকে বিভ্রান্তির মাঝে ফেলে দিচ্ছেন? তারা আপনার কি ক্ষতি করেছে? না তারা কবি হলে আপনার কদর সমাজ থেকে কমে যাবে? এ কারণে তাদেরকে কবিতা চর্চা থেকে দুরে সরে রাখছেন?
তবে নূতন কবিদের উপদেশ স্বরূপ একটি কথা বলতে পারেন, কবিদের জন্য কবিতা লেখার দুটি নিয়ম আয়ত্ত করতে হবে, শুধুমাত্র গদ্যছন্দের কবিতা লিখে, শুধুমাত্র নঞ্ মুক্তকছন্দের কবিতা লিখে, প্রতিষ্ঠিত কবি নাও হতে পারেন, প্রতিষ্ঠিত কবি হতে চাইলে পদ্যছন্দের কবিতাও লিখতে হবে, পদ্যছন্দের কবিতা লেখার রীতি নীতি কলাকৌশল সম্পর্কে জানতে হবে; তখন আর কবি, কবিতার মাঝে আর অপরিপূর্ণতা থাকবে না, যেমন খুশি সেভাবে কবিতাকে সাজাতে পারবেন; কবিতা রচনা সমন্ধে দক্ষ কারিগর হতে পারবেন; কবিতা রচনা নিয়ে আর কোন বাধা প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, এভাবে নূতন কবিদেরকে উপদেশ দিতে পারেন; তাদেরকে উপদেশ না দিয়ে তাদেরকে হতাশায় ফেলে দেন কেন?
লেখকঃ মোঃ মাসুদার রহমান (মাসুদ)