1. admin@ichchashakti.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪২ অপরাহ্ন

রাজনীতি কি?  — মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন 

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫৭ বার পঠিত

রাজনীতি কি? 

মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন 

 

আমার লেখাটি তাদের জন্য যারা খিলাফত চায়! আমার লেখাটি তাদের ও জন্য যারা গণতন্ত্র চায়! আমার এ লেখাটি সকলের জন্য যারা কোনো কিছুই না চায়।

 

রাজনীতি বড় ধরনের একটি বিষয়। আমি যদি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এর সংজ্ঞায়ন করতে যাই তাহলে এর সংজ্ঞাটা হতো এমন,

রাজ অর্থাৎ প্রধান আর নীতি বলতে ন্যায় পরায়ন এমন কিছুই হবে। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় রাজনীতিতেই সবচেয়ে বেশি নীতিকে বিসর্জন দেওয়া হয়। আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন নীতি বিসর্জন দিয়ে রাজত্ব কায়েম করাকে কোন সংবিধানের ভাষায় রাজনীতি বলে?

রাজনীতির অবস্থাটা এখন দুর্নীতিতেই রূপান্তর হয়েছে।

রাজনীতি নামক নোংরা খেলায় কেউ বাদ নাই এখন দাড়ি টুপি ওয়ালারা সহ সকলের শক্ত অবস্থান দেখা যায়। কিন্তু আফসোসের বিষয় তারা কেউ তাদের রাজনীতিতে কোনো বিষয় খোলাশা করছেন না। তারা রাজনীতির কোনো সুন্দর সংজ্ঞা জনসম্মুখে প্রকাশ করছেন না। তাহলে তারা আসলে চাচ্ছে কি? প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গেলো!

রাজনীতি বলতে জনগণের যা ধারণা একটু যেনে নেই,

রাজনীতি হলো কাম কাইজ না করে, মুখে গালাগালি করে, অন্যকে ঠকিয়ে, অন্যর সাথে জোড় করে, বিভিন্ন ভাবে ইসু তৈরি করে চাদা তুলে, টাকার বিনিময়ে সালিস করে দিয়ে, গলাবাজি করে, গাজা মদ খেয়ে রাস্তায় চোখ লাল করে ঘুরে বেড়ানো, গরিবের সম্পদ লুট করে নিজের পকেট মোটা করাকে রাজনীতি বলে। যেমন- সাহেদ,  প্রদীপ গং।

ও! প্রদীপ তো পুলিশ না! ?

 

আসলে রাজনীতি যেমন হওয়ার কথা ছিল গুণীজনদের মতে একটু যেনে নেই,

রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি  বা রাজগতি বা রাজবুদ্ধি হলো  দলীয় বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সমষ্টি, উদাহরণস্বরুপ সম্পদের বণ্টন হল এমন একটি কর্মকাণ্ড। রাজনীতি এ্যাকাডেমিক অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা।

 

রাজনীতি একটি বহুমুখী শব্দ। এটি আপোষের ও অহিংস রাজনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে ইতিবাচক অর্থে, অথবা সরকার বিষয়ক বিজ্ঞান বা কলা হিসেবে বিশদভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি এটি প্রায়শই একটি নেতিবাচক অর্থও বহন করে।উদাহরণস্বরুপ, উচ্ছেদবাদী উইনডেল ফিলিপস ঘোষণা দেন “আমরা রাজনৈতিক চাল চালি না, দাসপ্রথার বিরোধিতা নিয়ে হাসি তামাশা করা আমাদের স্বভাবে নেই।”রাজনীতিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন পরিসরে মৌলিকভাবে এবিষয় নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা রয়েছে, যেমন এটি কীভাবে ব্যবহার করা উচিত, বিস্তৃতভাবে নাকি সীমিতভাবে, রাজকীয়ভাবে নাকি সাধারণভাবে, এবং কোনটি এক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবীঃ সংঘাত নাকি সমবায়।

 

রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যার মধ্যে আছে কারও নিজস্ব রাজনৈতিক অভিমত মানুষের মাঝে প্রচার করা, অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময়, আইন প্রনয়ন, এবং বলপ্রয়োগের চর্চা করা, যার মধ্যে আছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা লড়াই।সামাজিক বিভিন্ন স্তরে বিস্তৃত পরিসরে রাজনীতির চর্চা করা হয়, ঐতিহ্যবাহী সমাজব্যবস্থাসমূহের গোত্র ও গোষ্ঠী থেকে শুরু করে আধুনিক স্থানীয় সরকার, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্র, এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত। আধুনিক জাতি রাষ্ট্রগুলোতে, মানুষ প্রায়ই নিজস্ব মতবাদ তুলে ধরতে রাজনৈতিক দল গঠন করে। কোন দলের সদস্যগণ প্রায়শই বিভিন্ন বিষয়ে সহাবস্থানের ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করে এবং আইনের একই পরিবর্তন ও একই নেতার প্রতি সমর্থনে সহমত হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন হল সাধারণত বিভিন্ন দলের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা।

 

রাজনৈতিক ব্যবস্থা হল কোন কাঠামো যা কোন সমাজের মধ্যকার গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পদ্ধতিসমূহকে সংজ্ঞায়িত করে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় প্রাথমিক প্রাচীন যুগে, যেখানে প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি, চাণক্যর অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি (খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী), এবং কনফুসিয়াসের লেখার ন্যায় দিগন্ত উন্মোচনকারী কাজগুলো পাওয়া যায়।

 

আচ্ছা ইসলাম রাজনীতি সর্ম্পকে কতটুকু অবগত একটু বুজিয়ে বলি কুরআন সুন্নাহের আলোকে এবং প্রথম আলোর এক বিবৃতিতে ২১শে আগস্ট ২০২৩ মনজুরুল হক এর ইসলামী রাজনীতি নিয়ে কিছু কথা এখানে এই অধম বলার চেষ্টা করবো,

 

মনজুরুল হক ভাই বলেন,

মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাবের আগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল নৈরাজ্যে ভরা। গোত্রভিত্তিক সমাজে ভেদাভেদই ছিল প্রধান। কলহ, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি লেগেই থাকত। কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকায় আরব সমাজ ছিল বিভক্ত। নৈরাজ্যপূর্ণ আরবে মহানবী (সা.) যে অবিস্মরণীয় রাজনৈতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর।

 

 মহানবী (সা.)–র রাজনৈতিক দায়িত্ব

আল্লাহ–তাআলা ঘোষণা করেছেন, তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনের হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে বিজয়ী করে তোলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সুরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৮)। একই দায়িত্বের কথা তিনি সুরা তাওবা (আয়াত: ৩৩) এবং সুরা আস-সফ্‌ফেও (আয়াত: ৯) উল্লেখ করেছেন।

 

ইসলাম নামের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধানকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ছিল মহানবী (সা.)–এর দায়িত্ব, যেন তা মানবসমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হয়।

 

মহানবী (সা.)–র রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্য

মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাবের আগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল নৈরাজ্যে ভরা। গোত্রভিত্তিক সমাজে ভেদাভেদই ছিল প্রধান। কলহ, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি লেগেই থাকত। কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকায় আরব সমাজ ছিল বিভক্ত। নৈরাজ্যপূর্ণ আরবে মহানবী (সা.) যে অবিস্মরণীয় রাজনৈতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর।

 

 মহানবী (সা.)–র রাজনৈতিক দায়িত্ব

আল্লাহ–তাআলা ঘোষণা করেছেন, তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনের হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে বিজয়ী করে তোলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সুরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৮)। একই দায়িত্বের কথা তিনি সুরা তাওবা (আয়াত: ৩৩) এবং সুরা আস-সফ্‌ফেও (আয়াত: ৯) উল্লেখ করেছেন।

 

ইসলাম নামের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধানকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ছিল মহানবী (সা.)–এর দায়িত্ব, যেন তা মানবসমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হয়।

 

মহানবী (সা.)–র রাজনীতির লক্ষ্য

ওপরের আয়াত থেকে বোঝা যায় মহানবী (সা.)–র রাজনীতি ছিল ইসলামের জন্য। ধর্মীয় চেতনাকে বদ্ধমূল করে আল্লাহ ভীরু চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে চেয়েছেন তিনি, যেন ধর্মীয় বিধান মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। তাহলেই সমাজের বর্বরতা ও নৈরাজ্য দূর করা সম্ভব। তাঁর রাজনীতির লক্ষ ছিল:

 

১. আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর নির্দেশিত আইন প্রতিষ্ঠা করা।

২. শিক্ষা, অর্থ, সমাজ, সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান পরিপালনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

৩. মানুষে মানুষে বৈষম্য, অনাচার, অবিচার, অন্যায় দূর করে সাম্য, শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার ও সুষম শাসনের ব্যবস্থা করা।

৪. যোগ্য ও খোদাভীরু নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজ পরিচালনা করা।

৫. পরকালীন কল্যাণের পথকে সবার জন্য মসৃণ করে দেওয়া, যেন পার্থিব প্রবঞ্চনার গোলকধাঁধায় মানব জীবন বরবাদ হয়ে না যায়।

 

মহানবী (সা.)–র রাজনীতির বৈশিষ্ট্য

 

মহানবী (সা.)-র রাজনীতির তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল:

১. চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি: সকল নবীর রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁদের চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি। তাঁদের নিষ্কলঙ্ক দীর্ঘজীবন যে পরার্থপর পরিচয় বহন করে, তা অন্য কোথাও মেলা ভার। মহানবী (সা.)–এর রাজনীতিতে এই বৈশিষ্ট্য ছিল সমুজ্জ্বল। ফলে তাঁর নিখাঁদ চরিত্রের প্রভাবকে শুধু রাজনৈতিক কার্যকলাপের দোহাই দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না।

২। উপায়-উপকরণের পবিত্রতা: তিনি কোনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মতো উপায় অবলম্বন করে রাজনীতি করেননি। প্রতিপক্ষের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশ পোষণ করতেন না। চরম শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করতেন। তারা ইসলামের আদর্শ মেনে নিলে তাদের আগের সব দোষ মাফ করে দিতেন।

৩. উদ্দেশ্যের নিষ্কলুষতা: ইসলামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তাঁর ছিল কাম্য, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা নয়। না হলে তিনি কুরাইশের প্রস্তাব মেনে নেতৃত্ব গ্রহণ করে নিতে পারতেন।

 

এই তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য স্বার্থান্বেষী ও দুনিয়াদারদের রাজনীতি থেকে মহানবী (সা.)-কে পৃথক মর্যাদা দিয়েছে।

 

রাজনৈতিক জীবনের সূচনা

দ্বীনে হককে আর সব দ্বীনের ওপর বিজয়ী করা সংক্রান্ত যে দায়িত্বের কথা আল্লাহ–তাআলা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলেছেন, তার সবগুলো অবতীর্ণ হয়েছে মদিনায়। মদিনার সময়টি ছিল আল্লাহর বিধান প্রয়োগের সময়। মক্কার সময়টি মনন-মানসের প্রস্তুতিকাল।

 

৪০ বছর বয়সে নবুয়তপ্রাপ্তির মক্কায় যে সময়টুকু মহানবী (সা.) কাটিয়েছেন, তখন তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ। জাগতিক উপায়-উপকরণ বলতেও তেমন কিছু তাঁর হাতে ছিল না। তাই তিনি প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তখন। হিজরতের পর ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।

 

আমরা যদি মনযূরুল হক ভাইয়ের কথা মেনে নেই তাহলে চিন্তা করার বিষয় কত জন ইসলামী দল এই বিধানের উপর সচল আছেন। আসলে ভাই জনগণ শান্তি চায় হানাহানি মারামারি চায় না যেটা ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হলে আশা করা যায় কিন্তু আগে মানুষ হতে হবে প্রতিটা ইসলামী মানুষকে ।

 

আচ্ছা সনাতনী বা হিন্দু ধর্মে রাজনীতি কি বলে,

 

হিন্দুধর্মে রাজনীতির যে রূপটি আমরা দেখতে পাই তা হচ্ছে রাজতন্ত্র। এখানে ক্ষত্রিয় হবেন রাজা। রাজা শাসন করবেন ব্রাহ্মণের প্রণীত ধর্মীয় বিধানমতে। রাজা এবং রাজার নীতি হবে-

 

‘নৃপতি স্বয়ং পরের বিশ্বাসভাজন হবেন, পরকে কদাচ বিশ্বাস করবেন না। এমনকি পুত্রের প্রতিও বিশ্বাস করা প্রশস্ত নহে।’ –মহাভারত, শান্তি পৰ্ব, ৮৫।

‘ইন্দ্র, বায়ু, যম, সূর্য, অগ্নি, বরুণ, চন্দ্র ও কুবের এই অষ্ট দিকপালের সারভূত অংশ দিয়ে ঈশ্বর রাজাকে সৃষ্টি করেছেন।’ –মনু সংহিতা, ৭।

‘ধর্মের দ্বারা রাজা রাজ্য লাভ করেন এবং ধর্মানুসারেই রাজ্য পালন করেন।’ –বাল্মিকী রামায়ণ, উত্তর কাণ্ড ৭১।

‘রাজা নিজ নগরে ধবল গৃহাদি নির্মাণ করে তথায় ব্রাহ্মণ বাস করাবেন।’ —যাজ্ঞ বন্ধ, সংহিতা-২।

‘রাজা দেবতা ও ব্রাহ্মণদিগকে সর্বদা পুজা করবেন’। –বিষ্ণু সংহিতা ৩।

‘রাজাই সনাতন ধর্ম।’ – বাল্মিকী রামায়ণ, উত্তর কাণ্ড ৭১।

‘পিতা যেমন ঔরসজাত পুত্রকে প্রতিপালন করেন, রাজা তেমন ব্রাহ্মণকে

সর্বতোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।’ –মহাভারত, শান্তি পর্ব ১৬৫।

হিন্দু ধর্মে ব্রাহ্মণের অধিকার ও শ্রেষ্ঠত্ব সংরক্ষিত হয়েছে এভাবে—

‘তুমি কদাচ ব্রাহ্মণগণের দণ্ডবিধান করবে না, যেহেতু ইহলোকে ব্ৰাহ্মণগণ‍ই সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট হয়েছেন।’ –মহাভারত, শান্তি পর্ব ৫৬।

‘হউক প্রচ্ছন্ন বা প্রকাশ্য, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শূদ্র, যে কোন দ্যুতকারী যথোচিত মাত্রায় দণ্ডনীয়, ব্রাহ্মণেরা কায়িক শাস্তি পাবেন না; কিন্তু অর্থদণ্ড ভোগ করবেন। —মনুসংহিতা ৯।

‘ব্রাহ্মণকে আঘাত করলে তার রক্ত যত ধূলিকণা ভিজায় আঘাতকারী তত বৎসর নরকবাস করবে।’ —মহাভারত, শান্তি পৰ্ব ১৬৫।

 

হিন্দুশাস্ত্রে উল্লিখিত এসব বিধানে স্পষ্টতই দেখা যায়, রাজা হলেন দেবতাদের সারাংশ ও সনাতন ধর্ম এবং ব্রাহ্মণের সেবায়েত। বৈশ্য, শূদ্র নয়, ব্রাহ্মণকে নিয়েই রাজা ব্যস্ত। রাজা একনায়ক হলেও ব্রাহ্মণসেবা না করে তার নিস্তার নেই। তাই রামায়ণে আমরা দেখি, রাজা রাম ব্রাহ্মণের নির্দেশমত অন্যায়ভাবে শূদ্র হত্যা করেছেন এবং জঘন্যভাবে সীতার পরীক্ষা নিয়েছেন। মোদ্দা কথা হল, হিন্দু ধর্মে রাজতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। এখানে গণতন্ত্রের ঠাঁই নেই। শূদ্র বৈশ্যদের রাজাও হতে নেই আর রাজ্যের সম্পত্তি থেকে ব্রাহ্মণের ন্যায় সাদা বাড়িও পেতে নেই। ব্রাহ্মণের রাজতন্ত্র থাকলেও সেখানে শূদ্রের গণতন্ত্র নেই।

 

বাংলাদেশে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ বড্ড গোলমেলে এবং একথা সর্বাংশেই সত্যি যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছুই নেই। কেন হঠাৎ এই উপলব্ধি বা নতুন করে এই সত্য বুঝতে পারা, তা একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিবো । প্রায় দের মাস ধরে নিজের টিকিয়ে রাখার জন্য দেশের  রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পঙ্গু করে দেয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়েছেন সাবেক সরকার প্রধান। মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার মতো বর্বরতা কেবল বাংলাদেশের রাজনীতিতেই ঘটছে এবং তা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে আরও বর্বরতম উগ্রবাদী কিছু রাজনৈতিক দল ।আমি জানি না, রাজনীতি আসলে কার জন্য? যদি মানুষের জন্যই হয়ে থাকে তাহলে মানুষকে পুড়িয়ে মেরে, আতঙ্কিত করে ক্ষমতা লাভের এই প্রক্রিয়াকে কোন রাজনৈতিক দর্শন দিয়েই কি বিশ্লেষণ করা যায়? যায় না। এমনকি, শান্তি ও সংঘাতের কোন সূত্রেই একথা এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাইনি যে, কোন অধিকার আদায়ের জন্য কোনভাবেই সন্ত্রাসকে এভাবে ব্যবহার করা যায়। অধিকার আদায়ের বহু মত ও পথ রয়েছে। সেগুলো নিয়ে বিশ্বের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনীতিবিদ এবং এ্যাক্টিভিস্টগণ বহু বই লিখেছেন এবং বিশ্লেষণ করেছেন। কিন্তু কেউই কোথাও মানুষকে হত্যা করে মানুষের জন্য অধিকার আদায়ের কোন পথের কথা উল্লেখ করেননি কিংবা সমর্থনও করেননি। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখছি বিপরীত চিত্র।

 

বাংলাদেশ রাজনীতি প্রেক্ষা পটে  শুধু রক্তই দেখা যায় যেমন:

১৯৫২,১৯৬২,১৯৬৬,১৯৬৯,১৯৭০,১৯৭১,১৯৭২,১৯৭৫,১৯৮৯,২০০৪,২০০৯,২০১৩,২০১৮,২০২২,২০২৪

বিগত এই সালগুলো হলো রক্তে রঞ্জিত ইতিহাসের জটিল কিছু অধ্যায়।

 

ইতিহাস ও ধর্ম টানলে দেখা যায় মানুষের শান্তি কেবল আছে ঈমাম হায়াতের উক্তির বিশ্লেষণের উপর।

মানবতার মুক্তির এক নীতি হলো রাজনীতি।

সংবিধান কুরআন করলে শান্তি সম্পূর্ণ রূপে আশা করা যায়। তবে এই জন্য আলেমে আলমে যুদ্ধ নয় এক হয়ে নেক ভাবে কাজ করলে মঙ্গলজনক রাজনীতির এক নতুন ইতিহাস বাংলাদেশ কায়েম হবে। নতুবা মিরজাফরী ইতিহাস বারবার বাংলার বুকে রচনা করা হবে। এক হোন সবার সাথে ধর্ম নিরপেক্ষভাবে দেশের স্বার্থে ধর্মে স্বার্থে  এক হওয়ার আহ্বান করছি অধমে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park