1. admin@ichchashakti.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

সিংড়ায় কুমড়ো বড়ি তৈরী করে স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তারা

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬ বার পঠিত

প্রতিনিধিঃ সামাউন আলী, সিংড়া (নাটোর) 

 

গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা, সেই রাস্তার দুই পাশে ছোট ছোট টিনের চালায় রোদে শুকানো হচ্ছে হলুদ রঙের কুমড়ো বড়ি। বাড়ির উঠানে বসে মেয়েরা তৈরী করছে এসব কুমড়ো বড়ি। রাতে ভেজানো ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে সেই ডালে পানি, কালো জিরা ও অন্যান্য মসলা মিশিয়ে মাখিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ টিনের চালে গুটি গুটি করে কুমড়ো বড়ি দিচ্ছেন। মেয়েদের কুমড়ো বড়ি তৈরীর এমন দৃশ্য দেখা গেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার ০৪ নং কলম ইউনিয়নের পুন্ডরী গ্রামে। এ গ্রামের বেশ কিছু  জন নারী উদ্যোক্তা বাণিজ্যিক ভাবে কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন প্রায় ৫- ৬ বছর ধরে। শীতকালে ৪- ৫ মাস কুমড়ো বড়ি তৈরী করে সংসারের বাড়তি আয় করছেন তারা।

 

নারী উদ্যোক্তারা বলছেন, সব খরচ বাদে মৌসুমে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হয় তাদের। এতে অনেকের সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। বদলে গেছে একসময়ের অভাব-অনাটন সংসারের হালচিত্র।

 

সরেজমিনে পুন্ডরী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠোনে বসে কুমড়ো বড়ি তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। সাধারণত কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ছোট বড় সব বয়সী নারীরাই এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন।

 

পুন্ডরী গ্রামের নারী উদ্যোক্তা রাশেদা বেগম জানান, তার বাবার বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল এলাকায়। সেখান থেকেই কুমড়ো বড়ি তৈরীর কাজ শিখেছেন তিনি। বিয়ের পর স্বামীর সংসারের অভাব দেখা দিলে কুমড়ো বড়ি তৈরী করে বিক্রির কথা ভাবেন। প্রথমত অল্প পরিমান কুমড়ো বড়ি তৈরী করে বাজারে বিক্রয় করা শুরু করেন তিনি। তাতে লাভবান হওয়ায় স্বমীর সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করেন রাশেদা বেগম। রাশেদা বেগমের সফলতা দেখে এ গ্রামের নারীরা উদ্ধুদ্ধ হয়ে তারাও বাণিজ্যিক ভাবে কুমড়োবড়ি তৈরী করা শুরু করেন। রাশেদা বেগম ছাড়াও এই পুন্ডরী গ্রামের নুরজাহান বেগম, আলেয়া বেগম ও কাজলী বেগম সহ অনেক  নারী উদ্যোক্তা এখন কুমড়োবড়ি তৈরী করে সংসারের বাড়তি আয় করছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুইশত কেজি থেকে আড়াইশত কেজির কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন এ গ্রামের নারী উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে রাশেদা বেগম একাই করেন ৫০-৬০ কেজির কুমড়ো বড়ি তৈরীর কাজ।

 

নারী উদ্যোক্তারা জানায়, ডালের সাথে কালো জিরা, সয়াবিন সহ নানা রকম উপকরন মিশিয়ে কুমড়োবড়ি তৈরী করা হয়। প্রতি কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরী করতে তাদের খরচ হয় ৯৫ – ১০০ টাকা। বাজারে পাইকারী বিক্রি হয় ১৩০ – ৩৫ টাকা আর খুচরা বিক্রি হয় ১৫০- ১৬০ টাকা কেজি দরে। এতে খরচ বাদে প্রতি কেজিতে লাভ হয় ৩০- ৫০ টাকা।

 

সিংড়া বাজারের কাঁচা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, পুন্ডরী গ্রামের নারী উদ্যোক্তাদের হাতে তৈরী করা কুমড়ো বড়ি খেতে ভালো লাগে বলে বাজারে এ বড়ির চাহিদা বাড়ছে।

 

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাঙালীর খাদ্য তালিকায় কুমড়ো বড়ি বেশ জনপ্রিয়। উন্নত বাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে গ্রামের নারী উদ্যোক্তারা আরো বেশি উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park